শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৬ অপরাহ্ন
দেশের ছয় জেলায় বজ্রপাতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাবনায় বজ্রপাতে মারা গেছেন বাবা-ছেলেসহ চারজন। সুনামগঞ্জেও বাবা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাবনা, সুনামগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও নেত্রকোণায় এসব বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। ঢাকাটাইমস প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
পাবনা: বেড়া উপজেলায় পাট ধোয়ার সময় বজ্রপাতে মারা গেছেন বাবা-ছেলেসহ চারজন। এরা হলেন, বেড়ার চাকলা ইউনিয়নের পাঁচুড়িয়া গ্রামের মোতালেব সরদার (৫৫), মোতালেবের দুই ছেলে ফরিদ উদ্দিন (২২) ও শরিফ উদ্দিন এবং একই গ্রামের রহম প্রামাণিক (৫৫)।
দুপুর সোয়া দুইটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বেড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আরিফুল ইসলাম জানান, তারা পাট ধুচ্ছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। এলাকাবাসী তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।
সুনামগঞ্জ:
তাহিরপুর উপজেলায় মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে পিতা-পুত্রের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন, হারিদুল মিয়া (৪৭) ও তার ছেলে মো. তারা মিয়া (১২)। তাদের বাড়ি উপজেলার ২ নম্বর দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের মানিক কিলা গ্রামে।
সকাল ১১টায় উপজেলার ঘারকিত্তা হাওরে মাছ ধরতে যান হারিদুল ও তার ছেলে। হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গার আলফাডাঙ্গা উপজেলায় বজ্রপাতে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেনড়- মকবুলের ছেলে আল আমিন (৩০), গোলাম রসুলের ছেলে হুদা (৩২) ও মো. বরকতের ছেলে হামিদুল (৩৫)। তাদের বাড়ি মেহেরপুরের বারাদি ইউনিয়নে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক সোনিয়া আহমেদ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ময়মনসিংহ:
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও ফুলপুর উপজেলায় পৃথক বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে ফুলবাড়িয়ায় বজ্রপাতে চৈইত কোচ (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। দুপুরে উপজেলার বড়বিলা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার জানান, ফুলবাড়িয়া উপজেলার বড়বিলা বিলে চৈইত ও তার বড় ভাই মনু বর্মন মাছ ধরছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই চৈইতের মৃত্যু হয়। এতে তার ভাই মনুও আহত হন।
এছাড়া, দুপুরে ফুলপুর উপজেলায় পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় কৃষকসহ দু’জন নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- কৃষক জামাল উদ্দিন (৪০) ও সোহাগ মিয়া (২৪)।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুরে কৃষক জামাল ধানের চারা নিয়ে ফসলের মাঠে যাওয়ার সময় এবং সোহাগ মিয়া নিজের হাঁসের খামারে খাবার দিতে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তারা মারা যান।
ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেবুন্নাহার শাম্মী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহী:
গোদাগাড়ী উপজেলায় জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে দুরুল হুদা (৪০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
দুপুর তিনটার দিকে মাছমারা বেনীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুরুল হুদা মাছমারা গ্রামেরই বাসিন্দা।
গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আযম তৌহিদ বজ্রপাতে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জমিতে কাজ করছিলেন কৃষক দুরুল হুদা। এ সময় হালকা বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাত হলে তিনি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এ নিয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলা হবে।
নেত্রকোণা:
নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলায় গরু চরাতে মাঠে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে এনামুল হক (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এনামুলের বাড়ি সন্ন্যাসীপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আলী।
রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক জানান, সকালে গরু নিয়ে মাঠে যাচ্ছিলেন এনামুল। পথেই বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।